Search This Blog

Saturday, June 18, 2011

লোকে ছড়া লেখে কেন? [১]

লোকে কেন নানারকম কান্ড করে তা বিশ্লেষণ কার সাধ্য - তবে, এটা হ’তো বলা অসঙ্গত হবেনা যে তনুর মত লোকেরা হয়তো ছড়া বানায় - স্রেফ অল্প অানন্দ পাবার জন্য। ক্ষ্যাতি ধন মানের জন্য কবিতা লেখে সুনীল গাঙ্গুলির মতন যারা, তাঁরা। অার রবীন্দ্রনাথ কেন কবিতা লিখেছেন সেদিকে যাচ্ছিই না।

তো - ছড়া লেখা কি তনুশ্রেনীর লোকেদের খালি নির্মল এবং নিরস অানন্দের জন্য? নাকি এখানে কিছু লঘু গুরু রসের স্থানও পাওয়া যায় ? তার বিচার পাঠকরা করবেন। অামি এখানে কিছু কবিতা ওর তার প্রাসঙ্গীক ঘটনার সূত্রপাত উল্লেখ করছি।

একথা বললে হয়তো ভুল হবেনা যে ছোট বেলার ছড়া লেখা, যেমন “বিশ্বজিত মামা, গায়ে ছেঁড়া জামা”, ছেলেবেলাতেই পুরোপুরি শেষ হয়নি। বাবুইয়ের বিয়ে ও কুকুলের বিয়েতে অামি দুটো লম্বাটে কবিতা লিখেছিলাম।

বর্তমান কালের ছড়া শুরু হয় নেহাতই ইন্টারনেটের সাহাজ্যে নতুন করে গড়ে ওঠা বৃহত্তর বন্ধুগন্ডির মধ্যে অাবার ছোটবেলার সঙ্গীদের খুঁজে পাওয়া এবং মাতৃভাষায় নিজের কথা অভিব্যক্ত করার অানন্দে।


চুল খুলে বসেছিল দিলখোলা পিয়ালি
শাল গাছে মই ছিল, তাল গাছে হঁেয়ালি
কি কপাল করেছিল শ্রীগোপাল গান্ধী
ঢিল মারে লোকজন, কিল মারে ঠানদি

তনু

ওপরের ছড়াটি তেমনিই কিছু বছর অাগে লিখেছিলাম - যখন শান্তিনিকেতনকে অবনতির থেকে রক্ষা করার ব্যাপারে প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের জোগ দেবার উদ্যোগে তখনকার পশ্চিম বাংলার গভর্নার শ্রী গোপালকৃষ্ণ গান্ধী ডেকপছিলেন কথা বলতে, রাজভবনে। পিয়ালির কাছে অামন্ত্রন এসেছিল। সেসময়ে বাংলার কমুনিস্ট সরকার গোপাল গান্ধীর ওপর বেশ চটা নানারকম রাজনৈতিক এবং ব্যবস্থামূলক কারনে। ছড়াটা সেই পটভুমিকাকে পেছনে রেখে লেখা।

এইটি দিয়েই যতদূর মনে হয় অামার এই ধরণের ছড়া লেখার সুরু।

শান্তিনিকেতনরে চারপাসের অাবহাওয়া ও প্রকৃতি দুশিত করা বা সেখানে অতিরিক্ত বানিজ্যিকরণের ব্যাপারে লাহা বাঁধের জলাসয়কে বেসরকারি ব্যাবসায়ীর হাতে তুলে দিয়ে সেটা পাচিল দিয়ে ঢেকে টুরিস্টদের বিলাসিতার জন্য রিসর্ট বানানোর প্রতিবাদে যেটা লেখা হয়েছিল, সেটি হল -


লাহা বঁাধে উৎপাত, রাজনীতি, মামলায়
গন্যরা চিতপাত, অন্যরা সামলায়
হাল ছাড়ে হলধর শান্তিনিকেতনে
সরকারি চাকুরির দরকারি বেতনে
গাব গাছে ডাব ছিল, বেলুনেতে ছিদ্র,
এই সব ভাবছিল শান্তনু মিত্র ।

তনু

তন্দ্রা ও শুভাশিষ নিউ ইয়র্ক অঞ্চলে থাকে। তাদের নামে বছর চারেক অাগে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে ছড়া বানিয়ে প্রদীপের গুগল শান্তিনিেতন বোর্ডে যতদুর মনে হয় তুলেছিলাম পরের ছড়াটি। তন্দ্রা খুব খুশি হয়ে বেছিল এর জবাব ছড়াতেই দেবে। অাজও সেটা পাইনি।


তন্দ্রা ও শুভাশিষ কে

কাটলো বছর চিন্তা বিনা
ভ্যানকুভারে ধিনতা ধিনা
ঘুরছে লোকে গোলকধঁাধায়
অগাধ জলে, কিম্বা কাদায়
বছর শেষে পকেট কঁাচা
গিন্নী যেন হঁাড়িচঁাচা
এই চন্দ্রহারা রাতের কোলে
তন্দ্রাবতীর ছড়ার বোলে
শান্তি এল ক্লান্ত মনে
সুপ্ত হঁাসির গুপ্তধনে

তনুদা






এর পরের দুটি ছড়া একটু রাগ করে, একটু হতাস হয়ে এবং একটু খোঁচানোর চেষ্টায় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যেমন লিখেছিলেন- অাধমরাদের ঘা দিয়ে তুই বাঁচা - সেরকম মনবৃত্তিতে রচিত। মনবৃত্তি যাই হোক, তনুর ক্ষমতার মধ্যে যা এসেছে তাই প্রকাশিত হয় ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে।

শিক্ষকতা


দাড়ি কঁাচা হাঁড়িচাচা বাড়ি বঁাধগোড়াতে
ঝিমতালে নিমতলে ডিম পাড়ে মোড়াতে
ক্লাস ফেলে তাশ খেলে মাস কাটে জমিয়ে
ঘাস কাটে ছাত্ররা পাঠশালা কমিয়ে

তনু



এই তো হল অবস্থা

যুক্তিবিহিন ব্যক্তি কথা - কথার ছলে ব্যাঙের ছাতা
হাত পা ছুড়ে
শঙ্খচূড়ে
চিল্লায় সব গর্ত জুড়ে - স্বল্প বুদ্ধি গোবর মাথা
বুদ্ধিহীনের জীর্ণ মাপে, রাজনীতির ঐ নিম্নচাপে
বন্ধ ঘরে
গন্ধ ছাড়ে
কুসংস্কৃতির অন্ধকারে - ছিন্নমস্তা শুন্যে কঁাপে

তনু


অাজকের মত এখানেই শেষ করলাম। দেখি লেখাটা কেমন লাগছে।
তনু - ১৮-৬-২০১১

No comments: